উন্নত ভবিষ্যতের স্বপ্নে গত বছর রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন মোহাম্মদ আকরাম হোসেন (২৫)। তবে রাশিয়ায় থাকতে গিয়ে চাকরি নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে, দালালদের প্রলোভনে পড়ে রুশ সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যোগ দেন। সেই যুদ্ধে অংশ নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। আকরামের মৃত্যু ঘটেছে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়।
আকরাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর হোসেনপুর গ্রামের মোরশেদ মিয়ার ছেলে ছিলেন। শুক্রবার বিকালে রাশিয়া থেকে তার গ্রামের বাড়িতে তার মৃত্যুর খবর পৌঁছায়, যা তার পরিবারের মধ্যে শোকের ছায়া ফেলেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আকরামের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ছিল খারাপ। তার বাবা, মোরশেদ মিয়া, একজন দিনমজুর, যারা স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে কঠিন জীবন যাপন করতেন। আকরাম ছিল পরিবারের সবার বড়। ওয়েল্ডিং কাজ শিখে জীবিকার তাগিদে তিনি রাশিয়া পাড়ি দেন। রাশিয়ায় গিয়ে তিনি প্রথমে একটি কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন, তবে সেখানে বেতন ছিল অল্প, তাই তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। আট মাস পর, আড়াই মাস আগে, দালালদের প্রলোভনে আকরাম রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেন।
আকরামের বাবা মোরশেদ মিয়া বলেন, “বেতন কম থাকায় আকরাম দালালদের প্রলোভনে পড়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়। তাকে যুদ্ধের সম্মুখসারিতে থাকতে হবে, এমন শর্ত ছিল। পরিবার থেকে তাকে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করলেও সে জানায়, আর ফিরে আসার উপায় নেই।”
আকরামের মা, মোবিনা বেগম বলেন, “১৩ এপ্রিল থেকে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। রাশিয়ায় থাকা পরিচিত ব্যক্তিরাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিল না। শুক্রবার তার এক সহযোদ্ধা ফোন করে তার মৃত্যুর খবর জানায়।”
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া জানান, “স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমি মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছে।”
এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা, যেখানে একটি যুবক জীবন যুদ্ধে হারিয়ে যায়, কেবল ভবিষ্যতের আশা ও পরিবারকে সাহায্য করার জন্য।