প্রখ্যাত ইসলামিক বক্তা ও আলেম শায়খ আহমাদুল্লাহ সম্প্রতি এক বক্তব্যে এমন ১৭ শ্রেণির মানুষের কথা উল্লেখ করেছেন, যারা নামধারী মুসলমান হলেও তাদের কার্যকলাপ ও বিশ্বাসের কারণে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। তার মতে, শুধু নামের মুসলমান হলেই জান্নাত নিশ্চিত নয়, বরং বিশ্বাস, চরিত্র ও আমলের বিশুদ্ধতাই চূড়ান্ত পরিণতি নির্ধারণ করে।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ইসলামে ঈমান শুধু মুখের কথায় সীমাবদ্ধ নয়। যারা ইসলামের মূলনীতি, ফরজ বিধান, নৈতিকতা ও অপর মুসলমানদের প্রতি দায়িত্বশীলতা উপেক্ষা করে, তারা জান্নাত পাওয়ার যোগ্যতা হারাতে পারে—even যদি তারা মুসলমান পরিচয় বহন করে।
তিনি যেসব শ্রেণির মানুষকে সতর্ক করেছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
* যারা রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদত করে
* জাকাত বা ফিতরা আদায় করে না
* গিবত ও অপবাদে লিপ্ত থাকে
* অহংকার, হিংসা ও অন্যায় গর্বে জীবন কাটায়
* নিয়মিত নামাজ ও রোজা পালনে গাফিল
* কুফরি কথা ও কাজকে হালকা ভাবে দেখে
* ধর্মীয় বিদআতের অনুসরণ করে
* গোমরাহ দল ও মতবাদে লিপ্ত থাকে
* আল্লাহ ও রাসুলের আদেশ-নিষেধের অবজ্ঞা করে
* দুনিয়াবি স্বার্থে ইসলামকে বিকিয়ে দেয়
* অন্যায়ভাবে মানুষের হক নষ্ট করে
* পরিবার ও সমাজে অন্যায় ছড়িয়ে দেয়
* মুসলমানদের মধ্যে ফিতনা সৃষ্টি করে
* সত্যকে গোপন করে, অথচ জানে ও বুঝে
* ইসলামের শত্রুদের সহযোগিতা করে
* সত্য পথ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে সরে যায়
* আল্লাহর ভয়হীন জীবন যাপন করে
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যারা নিজেদের শুধরাবে না, তওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে আসবে না—তাদের জন্য ইসলামী পরিভাষায় ‘মুনাফিক’ বা ‘পাপাচারী’ বিশেষণ প্রযোজ্য হতে পারে। আর এরা যদি শেষ পর্যন্ত তওবা না করে মারা যায়, তবে জান্নাত তাদের জন্য নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে।”
মুসলমান পরিচয় শুধু মুখে নয়, বরং ঈমান, আমল ও নিয়তের বিশুদ্ধতার মধ্য দিয়ে একজন প্রকৃত মুসলমানের পরিচয় তৈরি হয়। তাই সময় থাকতে নিজের ভুল-ত্রুটি, গাফিলতি ও ভ্রান্ত আকীদা থেকে ফিরে এসে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সচেষ্ট হওয়া জরুরি।