আধুনিক যুদ্ধের নতুন হাতিয়ার ‘সাইবার তেলাপোকা’



যুদ্ধক্ষেত্রে নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহের জন্য সামরিক প্রযুক্তিতে জার্মানি নিয়ে এসেছে সাইবার তেলাপোকা। এই বিশেষ তেলাপোকাগুলো জীবিত পোকামাকড়ের দেহকে কৃত্রিম প্রযুক্তির সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি করা হয়েছে। পিঠে লাগানো ক্ষুদ্র ক্যামেরা ও সেন্সর দিয়ে এগুলো শত্রুর অবস্থান এবং পরিস্থিতি সরাসরি সেনাবাহিনীর কাছে পৌঁছে দেবে।


বুধবার (২৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।


সংবাদমাধ্যমটি বলছে, জার্মানির ‘সোয়ার্ম বায়োট্যাকটিক্স’ নামক একটি কোম্পানি এই প্রযুক্তি তৈরি করছে। এ বিষয়ে কোম্পানির প্রধান স্টেফান উইলহেলম বলেছেন, ‘আমাদের বায়ো-রোবটগুলো জীবিত পোকামাকড়ের ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যা উন্নত সেন্সর ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দ্বারা সজ্জিত। এগুলো স্বাধীনভাবে কিংবা ঝাঁক বেঁধে কাজ করতে সক্ষম।’


সাইবার তেলাপোকাগুলো দূর থেকে বৈদ্যুতিক সংকেতের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। পাশাপাশি, একাধিক তেলাপোকা একসঙ্গে ঝাঁক বেঁধে কাজ করতে পারবে, যা যুদ্ধক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর হবে। কঠিন ও বিপজ্জনক এলাকায় এই পোকাগুলো সেনাদের জন্য জরুরি গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে আসবে, যেখানে মানুষের পা দেওয়া কঠিন।


ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর জার্মানি প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে বড় ধরনের বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। এ ধরনের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি যুদ্ধের ধরনই পালটে দেবে বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা। আগের দিনের ভারী যুদ্ধযন্ত্রের পরিবর্তে ছোট ছোট, চতুর এবং স্বয়ংক্রিয় রোবটগুলোই এখন ভবিষ্যতের যুদ্ধক্ষেত্র দখল করবে।


বিশ্লেষকরা বলছেন, সাইবার তেলাপোকার মতো প্রযুক্তি শুধু সেনাবাহিনীর জন্যই নয়, নিরাপত্তা বাহিনী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকে তাদের প্রতিরক্ষা নীতি ও মনোভাবের বড় পরিবর্তন ঘটেছে জার্মানি। দেশটি এখন শুধু অস্ত্রের পরিমাণ বাড়ানো নয়, আধুনিক ও স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগী হয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post