চট্টগ্রাম নগরীতে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে শরীর থেকে মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন করে খুনের পর জানালার গ্রিল কেটে পালিয়ে গেছে স্বামী। বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১টার দিকে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটিতে একটি ভবনের নবম তলায় ওই ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই নারীর নাম ফাতেমা বেগম (৩২)। তার স্বামীর নাম মো. সুমন। তারা পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটিতে আর কে টাওয়ার নামে একটি ভবনে স্বামীসহ থাকতেন। তার স্বামী মো. সুমন পেশায় গাড়িচালক।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নারীকে হত্যায় ব্যবহার করা হয়েছে ছুরি ও চাপাতি। নৃশংসভাবে শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে ১১টি টুকরো করা হয়। এমনকি হাড় থেকে মাংসও কেটে ফেলা হয়েছে। ঘরের মেঝেতে ওইসব টুকরো ফেলে রেখে পালিয়ে যান ঘাতক। পুলিশ ধারণা করছে, হত্যাকারী ভিকটিমের স্বামী, যিনি ঘটনার পর থেকেই পলাতক। ঘটনাটি এলাকায় চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘রাত আনুমানিক ১২টার পর এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। ধারালো অস্ত্র দিয়ে এমনভাবে কুপিয়েছে যে, শরীর থেকে মাথা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পর পালানোর সময় ভবনের অন্যান্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা ঘাতক সুমনকে ধরে ফেলেন এবং ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে আটকে রাখেন। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই জানালার গ্রিল কেটে পালিয়ে যায় সে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।
ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, প্রায় ১০ বছর আগে সুমনের সঙ্গে ফাতেমার বিয়ে হয়। তাদের একটি আট বছর বয়সী সন্তান রয়েছে, যিনি ঘটনার সময় আত্মীয়ের বাসায় ছিলেন। সুমন পেশায় একজন পিকআপচালক। ঘটনার সময় বাসায় শুধু স্বামী-স্ত্রী ছিলেন।
ওসি আরও জানান, এটি একটি পরিকল্পিত এবং ঠান্ডা মাথার হত্যাকাণ্ড। পারিবারিক কলহ থেকেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ফাতেমা ও সুমনের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। নিহত ফাতেমার শরীরজুড়ে ছিল আঘাতের চিহ্ন। শরীর ক্ষতবিক্ষত করার পর তাকে ১১ টুকরা করে ঘরের মেঝেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ঘাতক সুমন।