শেখ হাসিনার নির্দেশেই গোপালগঞ্জে হামলা: দিল্লি থেকে অডিও বার্তায় চাঞ্চল্য

 


ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতাদের ওপর দফায় দফায় হামলার অভিযোগ উঠেছে।** সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক অডিও বার্তা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ থেকে জানা গেছে, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল এনসিপি নেতাদের হত্যা করা এবং তাদের কর্মসূচি পণ্ড করা। হামলার সমন্বয় করেছেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। এই হামলাকে কেন্দ্র করে মসজিদে মার্কিন বাহিনী ঢুকেছে বলে গুজব ছড়ানো হয়, যা পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলে দাবি করা হয়েছে।


অডিও বার্তাগুলোতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, "যেখানে যেখানে সম্ভব রাস্তাঘাট বন্ধ করো। আমাদের এই গোপালগঞ্জে আমাদের ছাত্রলীগের কর্মীদের হত্যা করেছে, ছাত্রদের হত্যা করেছে। এরই প্রতিবাদে যার যার জায়গা থেকে সেটা যেন করে, এটা নিয়ে আপনার কাজ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালান এনসিপির।"



জানা যায়, ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচি পণ্ড করতে দুদিন আগে থেকেই আশেপাশের এলাকা থেকে প্রায় ১০০০ নেতাকর্মী জড়ো করে আওয়ামী লীগ। তাদের লক্ষ্য ছিল এনসিপিকে কর্মসূচিস্থলে ঢুকতে দিলেও, তাদের জীবিত বের হতে দেওয়া হবে না, বিশেষ করে শীর্ষ নেতাদের হত্যা করা।


ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ভারত থেকে মোবাইল ফোনে গোপালগঞ্জের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং এনসিপির বিরুদ্ধে জনগণকে উসকে দিতে বেশ কিছু অডিও বার্তা পাঠিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। একটি অডিও বার্তায় শেখ হাসিনা নিষিদ্ধ ঘোষিত গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালকে বলেন: "এনসিপি নাকি গোপালগঞ্জে যাচ্ছে, টুঙ্গিপাড়া আমার বাবার কবর ভেঙে ফেলার ঘোষণা দিয়েছে। তোমরা বসে আছো কেন? যে যেভাবে পারো, নিহত করো। গোপালগঞ্জে কোনোভাবে যাতে ওরা ঢুকতে না পারে, কোনো ধরনের কর্মসূচি যাতে করতে না পারে। মনে রাখবে, গোপালগঞ্জের মাটি থেকে ওদের কেউ যাতে অক্ষত অবস্থায় ফিরে যেতে না পারে।"


আরেকটি অডিও বার্তায় শেখ হাসিনা নিষিদ্ধ ঘোষিত গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি (ও শহরের বেদগ্রামের বাসিন্দা) মোল্লাকে বলেন: "তোমরা ওখানে বসে কী করো? ওরা এনসিপি টুঙ্গিপাড়া যাবে, যেভাবে পারো ওদেরকে প্রতিহত করো।"



অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পরদিন বুধবার গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক মাঠে এনসিপির কর্মসূচির দিন সকালে নিষিদ্ধ ঘোষিত গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে এনসিপির গাড়িবহরে হামলা হয়। শুধু ছাত্রলীগ নয়, শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সহ দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গেও একাধিকবার টেলিফোনে কথা বলেন। তার নির্দেশের পর এনসিপির কর্মসূচি পণ্ড করা সহ দলটির শীর্ষ নেতাদের হত্যা করতে গোপালগঞ্জে থাকা দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা চতুর্দিক থেকে একযোগে হামলা চালান। সাবেক সংসদ সদস্য সোহেল তাজও এই হামলার জন্য শেখ হাসিনাকে দায়ী করেছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post