
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের চিত্রদুর্গ জেলায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। একটি বেসরকারি যাত্রীবাহী বাস বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগার উদ্দেশে যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ডিভাইডার টপকে বাসটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। সংঘর্ষের ফলে বাসের জ্বালানি ট্যাংকে আঘাত লাগলে মুহূর্তের মধ্যে পুরো যানটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং বেশ কয়েকজন যাত্রী ভেতরে আটকা পড়ে জীবন্ত দগ্ধ হন।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ট্রাকটি বাসের তেলের ট্যাংকে সরাসরি আঘাত করার কারণেই দ্রুত আগুন ধরে যায়। এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত আটজন বাসযাত্রী এবং ট্রাকচালকের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। বাসের দরজা দিয়ে বের হওয়ার সুযোগ না থাকায় জীবন বাঁচাতে অনেক যাত্রী জানালার কাচ ভেঙে লাফিয়ে পড়েন। বাসের যাত্রী আদিত্য সেই সময়ের বিভীষিকাময় পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে জানান যে, দুর্ঘটনার পর চারদিকে মানুষের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছিল এবং আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে একে অপরকে সাহায্য করাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও ততক্ষণে বাসের একটি বড় অংশ ভস্মীভূত হয়ে যায়। এই ঘটনার প্রভাবে তুমকুর সড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়, যা প্রায় আট কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ছিল। গোকর্ণগামী একজন নারী পর্যটক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান যে, দুর্ঘটনার পর কয়েক ঘণ্টা রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় শত শত যানবাহন আটকা পড়ে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়।
ভারতে মহাসড়কগুলোতে এই ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ইদানীং উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য যে, গত নভেম্বর মাসেও তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদ-বিজাপুর মহাসড়কে পাথরবোঝাই একটি ট্রাকের সাথে বাসের সংঘর্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। কর্ণাটকের এই সর্বশেষ দুর্ঘটনাটি আবারও মহাসড়কে নিরাপত্তা এবং চালকদের সতর্কতার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে।